মুমিন মুসলমান হিসেবে রাসুল (সা.)-এর দৈনন্দিন জীবনের অভ্যাস ও আমলগুলো জানা আবশ্যক। যেন একজন মুমিন হিসেবে পরিপূর্ণরূপে রাসুল (সা.)-এর অনুসরণ অনুকরণ করা যায়। আর এই অনুসরণ অনুকরণে রয়েছে ইহকাল ও পরকালের সফলতা। আলহামদুলিল্লাহ্! সংক্ষিপ্ত আকারে রাসুল (সা.)-এর দৈনন্দিন আমলগুলো এক স্থানে একত্রিত করা হয়েছে। আশা করছি, উক্ত আমলের তালিকা দ্বারা পাঠকবৃন্দ উপকৃত হবেন।
যেভাবে কাটতো রাসুল (সা.)-এর দিনরাত
রাতের শেষ প্রহরের আমল
► শেষ রাতে ঘুম থেকে জাগতে ঘুম থেকে জাগতেন।
► ঘুম থেকে উঠার দোয়া পড়তেন।
► মিসওয়াক করতেন।
► ইস্তেঞ্জার স্থানে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া পড়তেন।
► প্রয়োজন হলে গোসল করতেন।
► শুরুতে, মাঝখানে ও শেষে দোয়া পড়ে অজু করতেন।
► দোয়া-জিকির করতেন।
► তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন।
► তাহাজ্জুদের নামাজে লম্বা কেরাত পড়া অবস্থায় কাঁদতেন এবং দীর্ঘ রুকু সিজদা করতেন।
► দোয়া-মোনাজাতে কাঁদতেন।
► বিতরের নামাজ পড়তেন।
► বিতরের নামাজের পর একটি দোয়া পড়তেন ।
► মাঝে মাঝে কবর জিয়ারত করতেন ।
► কখনো কখনো হযরত ফাতেমা (রা.)-এর ঘরে গিয়ে তাদের তাহাজ্জুদের জন্য জাগাতেন।
► রোজা রাখার নিয়ত থাকলে সেহরি খেতেন।
ফজর
সুবহে সাদিকের সময়ে আমল
► আজানের উত্তর দিতেন।
► আযানের দোয়া পড়তেন।
► ঘরে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়তেন।
► সুন্নত নামাজের পর দোয়া পড়তেন।
► অল্প বিশ্রাম নিতেন।
► ঘর থেকে বের হবার দোয়া পড়তেন।
► দোয়া পড়ে ডান পা দিয়ে দরূদ পড়ে মসজিদে প্রবেশ করতেন।
► কাতার সোজা করতেন।
► ফজরের নামাজ আদায় করতেন।
► বিশেষ পরিস্থিতিতে ফজরের নামাজে ‘কুনুতে নাজেলা’ পড়তেন।
ফজর নামাজের পরের আমল
► কুরআন তেলাওয়াত করতেন ও বিভিন্ন দোয়া-মামুলাত আদায় করতেন।
► নামাজের পর ঘুরে বসে সাহাবীদের সময় দিতেন।
► ঘুমের অভ্যাস ছিল না।
► সূর্য উদয়ের সময় দোয়া পড়তেন।
► ইশরাকের নামাজ আদায় করতেন।
► দোয়া পড়ে বাম পা দিয়ে মসজিদ থেকে বের হতেন।
► কেউ চাইলে পানির পাত্রে আঙ্গুল চুবিয়ে বরকতময় করতেন।
► স্ত্রীদের ঘরে যেতেন এবং সালাম দিতেন।
►► আরো পড়ুন: অজুতে নাকে পানি দেওয়ার উপকারিতা
►► আরো পড়ুন: ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান ও এর উপকারিতা
►► ইসলামী সমাধান দ্রুত খুঁজে পেতে ভিজিট করুন আলকাউসার.কম-এ
দিনের প্রথমভাগে আমল
► খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধৌত করতেন।
► নাস্তা করতেন।
► ঘরে খাবার না থাকলে মাঝে মধ্যে রোজা রাখার নিয়ত করতেন।
► মসজিদে গিয়ে তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামাজ পড়তেন।
► সাহাবীদের সময় দিতেন।
► ইস্তেগফার পাঠ করতেন।
► মাঝে মধ্যে নবজাতক শিশুদের তাহনিক ও নামকরণ করতেন।
► আলোচনা সভায় কখনো খাবার খেতেন।
► আগত প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাৎ দিতেন।
► পরামর্শ করতেন।
► মজলিসের শেষে দোয়া করতেন।
► আত্মীয়-স্বজনের খবর নিতেন।
► বিভিন্ন দাওয়াতে যেতেন।
► রোগী দেখতে যেতেন।
► কখনো বাজারে যেতেন।
► দেখা সাক্ষাৎই হাসিমুখে সালাম-মুসাফাহা করতেন।
► অন্যের কাজে সহযোগিতা করতেন।
► কারো বাড়ি গিয়ে সালামের সাড়া না পেলে ফিরে আসতেন।
► কখনো কখনো এ সময় মদিনার বাগানে যেতেন।
► সপ্তাহে একদিন মসজিদে কুবায় যেতেন।
যোহর
দিনের মধ্য ভাগের আমল
► বাইরের কাজ সেরে ঘরে ফিরতেন।
► সালাতুত দোহা (চাশত) আদায় করতেন।
► নারীদের বিভিন্ন সমস্যা ও মাসালার সমাধান প্রদান করতেন।
► দুপুরের খাবার খেতেন।
► কাইলুলা (দুপুরের খাবার পরবর্তী স্বল্প বিশ্রাম) করতেন।
► বিশেষ প্রয়োজনে কেউ এলে সময় দিতেন।
► খাওয়ার শুরুতে ও শেষে দোয়া পড়তেন।
► জোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজে ঘরে পড়তেন।
► নামাজে গমনকালে কখনো স্ত্রীকে চুমু খেয়েছেন।
► জোহরের নামাজ আদায় করতেন।
► দ্বীনি তালিম করতেন।
► গুরুত্বপূর্ণ বিচার ও ফয়সালা-মীমাংসা করতেন ।
► বাড়িতে ফিরে দুই রাকাত সুন্নত পড়তেন।
আসর
দিনের শেষ ভাগের আমল
► আসরের আজান হলে চার রাকাত সুন্নত পড়তেন।
► আসরের নামাজ আদায় করতেন।
► সাহাবীদের সঙ্গে বসছেন।
► স্ত্রীদের সময় দিতেন।
► সাহাবীদের দাওয়াতে যেতেন।
► সম্পত্তি বণ্টন ও বিবাদসহ বিভিন্ন সমাধানে সময় দিতেন।
মাগরিব
রাতের প্রথম প্রহরের আমল
► মাগরিবের আযানের পর দোয়া পড়তেন।
► রোজা থাকলে দোয়া পড়ে ইফতার করতেন।
► মাগরিবের নামাজ আদায় করতেন।
► বিভিন্ন দোয়া ও মামুলাত আদায় করতেন।
► দুই রাকাত সুন্নত নামাজ ঘরে পড়তেন।
► ঘুমানো অপছন্দ করতেন।
► পানাহার করতেন।
► দস্তরখান বিছিয়ে খাবার খেতেন।
► খাবারের মজলিসে কথাবার্তা বলতেন।
► দস্তরখান উঠানোর দোয়া পড়তেন।
► দোয়া পড়ে দুধ পান করে কুলি করতেন।
এশা
রাতের মধ্য প্রহরের আমল
► এশার নামাজের পূর্ব পর্যন্ত ঘরে থাকতেন।
► এশার নামাজ পড়তেন।
► এশার পর মাঝে মাঝে সাহাবীদের সাথে কথা বলতেন।
► ঘরে ফিরে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়তেন।
► স্ত্রীদের সময় দিতেন।
► কখনো কখনো মুহাজির সাহাবীদের বাড়িতে যেতেন।
► বাইরে থেকে ঘরে ফেরার আগে মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন।
► ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতেন এবং শুয়ে পড়তেন।
► বিছানায় শুয়ে স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতেন।
► ঘুমের দোয়া পড়তেন।
► ঘুমের শুরুতে মাঝে মাঝে শরীরে ফু দিতেন।
► প্রয়োজন অনুভব করলে দোয়া পড়ে সহবাস করতেন।
► মাঝে মধ্যে গোসল করতেন।
► বালিশের পাশে মিসওয়াক রেখে ঘুমাতেন।
► ঘুমের মাঝে এপাশ-ওপাশ করলে দোয়া পড়তেন।