তাকওয়া অর্থ কি? কেন তাকওয়া অবলম্বন করা উচিত

তাকওয়া অর্থ কি

তাকওয়া

তাকওয়া অর্থ কি এবং কেন তাকওয়া অবলম্বন করা প্রয়োজন। সে সম্পর্কে আজকের প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে। তাকওয়া মানুষকে আল্লাহর পথে পরিচালিত এবং গোনাহের পথ পরিহার করতে সহায়তা করে। একজন মুত্তাকী বড়ই সৌভাগ্যবান। সর্বদা আল্লাহর রহমত তার উপর বর্ষিত হতে থাকে। দুনিয়াতেও সে রহমতে ছায়ায় বেষ্টিত থাকে। পরকালেও তার জন্য থাকে অসংখ্য নিয়ামত।

তাকওয়া অর্থ কি

ব্যবহারিক অর্থে তাকওয়া বলতে পরহেজগারি, খোদা ভীতি, আত্মশুদ্ধি ইত্যাদি বোঝায়।

পরিভাষায়, আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যাবতীয় অন্যায়, অত্যাচার ও পাপকাজ থেকে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা মানব জাতি সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য।

অন্যায়, পাপাচার থেকে বিরত থাকার জন্য।  আর এরই নাম তাকওয়া।

যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে তাকে বলা হয় মুত্তাকী। যে ব্যক্তি যত অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকবে। সে তত বড় একজন মুত্তাকী।

তাকওয়ার (আল্লাহকে ভয় করার) ১০ টি ইহকালীন উপকারিতা

১. রিজিক বৃদ্ধি পায়। ( সূরা‌ তালাক:২-৩)
২. দুনিয়ার কাজ সহজ হয়। (সূরা তালাক:৪)
৩. শয়তানের অনিষ্ট থেকে সুরক্ষা দেয়। (সূরা আ’রাফ:২০১)
৪.আসমান, জমিনের বরকত উন্মুক্ত হয়। (সূরা আ’রাফ:৯৬)
৫. হক ও বাতিল এর মধ্যে পার্থক্য করা যায়। (সূরা আনফাল:২৯)
৬. কাফেরদের অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা লাভ। (সূরা আলে ইমরান:১২০)
৭. আমল বিশুদ্ধ হয় এবং পাপ মোচন হয়। (সূরা আহযাব:৭০-৭১)
৮.আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়। ( সূরা আলে ইমরান:৭৬)
৯.‌ইলম ও জ্ঞান অর্জন হয়। (সূরা বাকারা:২৮২)
১০.প্রতিদান নষ্ট হয় না। ( সূরা ইউসুফ:৯০)


►► আরো পড়ুন: মহানবীর সিরিয়া সফর

►► আরো পড়ুন:  হাদিসের আলোকে যেমন ছিল রাসুল (সা.)-এর অবয়ব


তাকওয়া সংক্রান্ত আয়াত

يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقولوا قَولًا سَديدًا
হে ঐ সকল লোকেরা যারা ইমান এনেছ, তোমরা তাকওয়া অর্জন করো এবং উত্তম কথা বল।

يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقاتِهِ وَلا تَموتُنَّ إِلّا وَأَنتُم مُسلِمونَ

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।

 

وَلِلَّهِ ما فِي السَّماواتِ وَما فِي الأَرضِ ۗ وَلَقَد وَصَّينَا الَّذينَ أوتُوا الكِتابَ مِن قَبلِكُم وَإِيّاكُم أَنِ اتَّقُوا اللَّهَ ۚ وَإِن تَكفُروا فَإِنَّ لِلَّهِ ما فِي السَّماواتِ وَما فِي الأَرضِ ۚ وَكانَ اللَّهُ غَنِيًّا حَميدًا

আর যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে সবই আল্লাহর।

বস্তুতঃ আমি নির্দেশ দিয়েছি তোমাদের পূর্ববর্তী গ্রন্থের অধিকারীদেরকে এবং তোমাদেরকে যে, তোমরা সবাই ভয় করতে থাক আল্লাহকে।

যদি তোমরা তা না মান, তবে জেনো, সে সব কিছুই আল্লাহ তা’আলার যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে। আর আল্লাহ হচ্ছেন অভাবহীন, প্রসংশিত।

উপরোক্ত আয়াতের দ্বারা তাকওয়া অর্থ কি? তা বুঝে আসে। মূলত তাকওয়া হচ্ছে খোদা ভীতির নাম।

তাকওয়া সংক্রান্ত হাদিস

عن ابي هريرة – رضي الله عنه – قال: قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – – اكثر ما يدخلالجنة تقوى الله وحسن الخلق

আবূ হুরাইরাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ

যেসব গুনাবলী মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে তার অধিকাংশই হল তাকওয়া (যথারীতি পুণ্য কাজ করা ও অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকা) ও উত্তম চরিত্র।

عن أبى هريرة رضي الله عنه قال‏:‏ سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن أكثر ما يدخل الناس الجنة‏؟‏ قال‏:‏ “تقوى الله وحسن الخلق” وسئل عن أكثر ما يدخل الناس النار، قال‏:‏ “الفم والفرج”

আবূ হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, ‘কোন আমল মানুষকে বেশি জান্নাতে নিয়ে যাবে?’ তিনি বললেন, আল্লাহভীতি ও সচ্চরিত্র।

আর তাঁকে (এটাও) জিজ্ঞাসা করা হল যে, ‘কোন্ আমল মানুষকে বেশি জাহান্নামে নিয়ে যাবে?’ তিনি বললেন, ‘‘মুখ ও যৌনাঙ্গ (অর্থাৎ উভয় দ্বারা সংঘটিত পাপ)।’’

উপরোক্ত হাদিদের দ্বারা তাকওয়া অর্থ কি? তা বুঝে আসে।

তাকওয়া অর্থ কি এবং কেন তাকওয়া অবলম্বন করা প্রয়োজন এবং এ সংক্রান্ত আয়াত ও হাদিস নিয়ে আজকে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি সকলেই উপকৃত হবেন।

তথ্যসূত্রঃ মাসিক আলকাউসার পত্রিকা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *